জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই শক্তির উৎস গড়ে তোলার লক্ষ্যেই ভারত সরকার ২০২৩ সালে ঘোষণা করে ন্যাশনাল গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন।
এই মিশনের মাধ্যমে ভারত হতে চায় বিশ্বের গ্রিন হাইড্রোজেন হাব, যেখানে হাইড্রোজেন উৎপাদন, রপ্তানি, ও গবেষণার সব দিকেই থাকবে ভারতীয় নেতৃত্ব।
মিশনের মূল লক্ষ্যমাত্রা (২০৩০ সালের মধ্যে)
লক্ষ্য | পরিমাণ |
---|---|
সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন | প্রতি বছর ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন (MMT) |
নবায়নযোগ্য শক্তি সংযোজন | ১২৫ গিগাওয়াট |
সম্ভাব্য বিনিয়োগ | ₹৮ লক্ষ কোটি |
কর্মসংস্থান | ৬ লক্ষ+ |
CO₂ নির্গমন হ্রাস | প্রতি বছর ৫০ মিলিয়ন টন |
আমদানি বিল হ্রাস | ₹১ লক্ষ কোটি (প্রতিবছর) |
বাজেট ও সহায়তা
সরকার এই প্রকল্পে মোট বরাদ্দ করেছে ₹১৯,৭৪৪ কোটি।
এর মধ্যে রয়েছে:
- ₹১৭,৪৯০ কোটি – SIGHT প্রোগ্রাম (উৎপাদন ও প্রণোদনা)
- ₹১,৪৬৬ কোটি – পাইলট প্রকল্প
- ₹৪০০ কোটি – গবেষণা ও উন্নয়ন
- ₹৩৮৮ কোটি – অন্যান্য সহায়ক কর্মকাণ্ড
কোথায় কোথায় ব্যবহৃত হবে গ্রিন হাইড্রোজেন?
- ইস্পাত শিল্প – হাইড্রোজেন দিয়ে কয়লার বিকল্প তৈরির উদ্যোগ
- ট্রান্সপোর্ট – হাইড্রোজেনচালিত ট্রেন, ট্রাক ও বাসের পাইলট পরীক্ষা
- জাহাজ পরিবহন – দূরপাল্লার পরিবহনে পরিবেশ বান্ধব শক্তি
- বিদ্যুৎ উৎপাদন – রিমোট এলাকায় শক্তির জোগান
বড় শিল্প ও সংস্থার ভূমিকা
- রিলায়েন্স, আদানি, ইন্ডিয়ান অয়েল (IOCL) – হাইড্রোজেন উৎপাদন ও গিগা প্ল্যান্ট স্থাপন
- BPCL ও Sembcorp – গুজরাট ও তামিলনাড়ুতে বৃহৎ প্রকল্প
- IIT-মাদ্রাজ ও হুন্ডাই – দেশীয় ইলেক্ট্রোলাইজার ও ফুয়েল সেল গবেষণা কেন্দ্র
- ওড়িশা (গোপালপুর) – ৪০০০+ কোটি টাকার গ্রিন অ্যামোনিয়া প্রকল্প
আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের সম্ভাবনা
ভারত পরিকল্পনা করছে হাইড্রোজেন এক্সপোর্ট–এর জন্য এক ট্রেসেবল (traceable) ও স্ট্যান্ডার্ডাইজড ফ্রেমওয়ার্ক। ২০৪৭-এর মধ্যে শক্তিতে আত্মনির্ভরতা এবং ২০৭০-এর মধ্যে নেট-জিরো কার্বন লক্ষ্য পূরণে এই মিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সম্প্রতি ঘোষিত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প
- IOC-এর প্যানিপথে হাইড্রোজেন উৎপাদন ও সবুজ জেট ফুয়েল প্ল্যান্ট
- আদানি এনার্জি – ₹২৮০০ কোটি টাকার ট্রান্সমিশন প্রকল্প
- ওড়িশা – ₹২৮,০৮৪ কোটি টাকার ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রকল্পে হাইড্রোজেন হাব গঠনের পরিকল্পনা
উপসংহার
সবুজ হাইড্রোজেন শুধু ভবিষ্যতের শক্তি নয়, এটি এখনকার চাহিদা। ভারত এই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করে বৈশ্বিক নেতৃত্ব নিতে চলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই মিশন হতে পারে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা।
আপনার মতামত শেয়ার করুন:
আপনি কী মনে করেন, সবুজ হাইড্রোজেনই কি ভারতের ভবিষ্যৎ জ্বালানি সমাধান? নিচে কমেন্ট করে জানান!
Stay Connected with Us!
আমরা প্রতিদিন নতুন খবর, তথ্য এবং আপডেট শেয়ার করি। নিচের Telegram এবং WhatsApp চ্যানেলগুলোতে ক্লিক করে আপনি সহজেই আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন।