বৈবাহিক জীবনে নারীদের ঠিকানা পরিবর্তন: রীতি, নিয়ম ও বাস্তবতা
পরিচিতি
ভারতে এখনো একটি প্রচলিত প্রথা রয়েছে—একজন মেয়ে বিয়ে করলে, তার স্থায়ী ঠিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্বামীর বাড়ির ঠিকানায় পরিবর্তিত হয়ে যায়। যদিও এটি সামাজিকভাবে বহুদিনের চর্চিত রীতি, কিন্তু আধুনিক যুগে এই ধারণাটি কতটা যৌক্তিক এবং আইনি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কতটা বাধ্যতামূলক, সেটি নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।
ঠিকানা পরিবর্তন কি বাধ্যতামূলক?
না, আইনের কোথাও এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে বিয়ের পরে একজন মেয়ের ঠিকানা অবশ্যই তার স্বামীর বাড়ির ঠিকানায় পরিবর্তন করতে হবে। এটি একটি ঐতিহ্যগত ধারণা যা সামাজিক রীতিনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে, যেমন–
- আধার কার্ড
- ভোটার আইডি
- পাসপোর্ট
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
এইসব ডকুমেন্টে ঠিকানা আপডেট করতে হয়, যদি মেয়েটি বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে নতুন ঠিকানায় থাকতে শুরু করেন। এটি বাধ্যতামূলক নয়, বরং পরিস্থিতিনির্ভর।
কবে ঠিকানা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়?
- নতুন ঠিকানায় স্থায়ীভাবে বসবাস করলে
- সরকারি নথিতে ঠিকানার মিল থাকা প্রয়োজন হলে
- যৌথ ব্যাংক বা জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার সময়
- শিশুর জন্ম নিবন্ধন বা স্কুল অ্যাডমিশনের জন্য
আধার কার্ডে ঠিকানা পরিবর্তন করবেন যেভাবে:
- UIDAI ওয়েবসাইটে যান
- Aadhaar Login করে ‘Update Address’ অপশন সিলেক্ট করুন
- নতুন ঠিকানার প্রমাণপত্র (POA) আপলোড করুন
- সাবমিট করার পর SRN নম্বর পাবেন
- 5-10 কার্যদিবসের মধ্যে ঠিকানা আপডেট হয়ে যাবে
ডকুমেন্ট রেফারেন্স
PDF ডাউনলোড করুন
Click here to download the PDF
আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি কী বলছে?
আজকের দিনে, অনেক মেয়ে বিয়ের পরও নিজের বাবার বাড়ির ঠিকানা রাখেন, বিশেষ করে যদি তারা কর্মরত থাকেন বা শহর পরিবর্তন না করেন। এটি এখন সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পছন্দ এবং স্বাধীনতার অংশ। এমনকী অনেক দম্পতি মিলেই সিদ্ধান্ত নেন কোন ঠিকানা তাঁরা ব্যবহার করবেন।
উপসংহার
বিয়ের পর ঠিকানা পরিবর্তন এখন আর সামাজিক বাধ্যবাধকতা নয়, বরং একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আইনত এটি বাধ্যতামূলক নয়। তাই সমাজের চাপে না পড়ে, নিজের পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।