WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now
Instagram Join Now

ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা DRDO (Defence Research and Development Organisation) এক নতুন বিপ্লবের পথে হাঁটছে। সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, ভারত এখন এমন এক Quantum Sensing Technology (কোয়ান্টাম সেন্সিং প্রযুক্তি) তৈরি করছে, যা দিয়ে ২০০ মিটার গভীর পানির নিচে লুকিয়ে থাকা সাবমেরিনও শনাক্ত করা সম্ভব হবে।


 কোয়ান্টাম সেন্সিং প্রযুক্তি আসলে কী?

কোয়ান্টাম সেন্সিং এমন এক উন্নত প্রযুক্তি যা কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের মূলনীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে এমন সূক্ষ্ম পরিবর্তন ধরা যায় যা সাধারণ যন্ত্র দ্বারা সম্ভব নয়।

যেমন — সমুদ্রের গভীরে থাকা কোনো ধাতব বস্তু (যেমন সাবমেরিন) পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে সামান্য পরিবর্তন ঘটায়, আর এই কোয়ান্টাম সেন্সর সেই পরিবর্তনটি শনাক্ত করতে পারে।

সোনার (SONAR) সিস্টেম যেখানে শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে সাবমেরিন খুঁজে বের করে, সেখানে কোয়ান্টাম সেন্সিং সম্পূর্ণ নীরবে, অত্যন্ত নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারে।


 কেন এই প্রযুক্তি ভারতের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ

ভারতের চারপাশের সমুদ্র এলাকা — বিশেষ করে Indian Ocean Region (IOR) — এখন আন্তর্জাতিক কৌশলগত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সাবমেরিন নিয়মিত এই এলাকায় টহল দেয়।

এই পরিস্থিতিতে, গভীর পানির নিচে সাবমেরিন শনাক্ত করতে পারা ভারতের জন্য এক বিশাল কৌশলগত সুবিধা।

এই প্রযুক্তি কার্যকর হলে ভারতীয় নৌবাহিনী আগেই শত্রু সাবমেরিনের অবস্থান শনাক্ত করতে পারবে, ফলে দেশের উপকূল নিরাপত্তা অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।

এছাড়াও, এটি ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ (Atmanirbhar Bharat) মিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ এতে বিদেশি প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির উপর নির্ভরতা কমবে।


 এই প্রযুক্তির সম্ভাব্য সুবিধা

  • সমুদ্রের গভীরে থাকা শত্রু সাবমেরিন সহজে শনাক্ত করা যাবে
  • ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন সমুদ্র নজরদারি সম্ভব হবে
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-র সঙ্গে একীভূত করে আরও দ্রুত তথ্য বিশ্লেষণ করা যাবে
  • ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য হবে

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্প সফল হলে ভারত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো কোয়ান্টাম প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে অগ্রগণ্য দেশগুলির তালিকায় যুক্ত হবে।


 ভবিষ্যতের দিগন্ত — কোয়ান্টাম প্রতিরক্ষার যুগ

কোয়ান্টাম সেন্সিং কেবল সাবমেরিন শনাক্ত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা যেতে পারে —

  • কোয়ান্টাম রাডার, যা স্টেলথ বিমানের অবস্থান নির্ভুলভাবে ধরতে পারবে
  • কোয়ান্টাম ন্যাভিগেশন সিস্টেম, যা GPS ছাড়াই কাজ করতে সক্ষম
  • কোয়ান্টাম যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, যা সম্পূর্ণ নিরাপদ সামরিক যোগাযোগ নিশ্চিত করবে

এই প্রযুক্তি ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তিকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, এবং প্রমাণ করবে যে ভারত এখন সত্যিকারের কোয়ান্টাম যুগে প্রবেশ করেছে।


 উপসংহার

DRDO-র এই কোয়ান্টাম সেন্সিং প্রকল্প শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয় — এটি ভারতের আত্মনির্ভরতা, বৈজ্ঞানিক দক্ষতা এবং কৌশলগত শক্তির প্রতীক।
যখন এই প্রযুক্তি কার্যকর হবে, তখন ভারতীয় নৌবাহিনী বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী নৌবাহিনীতে পরিণত হবে — নীরবে, নিখুঁতভাবে, এবং প্রযুক্তিগতভাবে অদম্য।

Share with Your Friends

By Abdul Aziz Al Amman

Hi, I’m Abdul Aziz, a writer at All Information. I enjoy exploring topics related to education, technology, and current affairs, and I love sharing what I learn with others. My goal is to write in a way that informs, inspires, and helps readers understand complex ideas in a simple way. Writing isn’t just my work — it’s my way of connecting with people and spreading knowledge.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *